আজ জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, এলএনজির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

আজ জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস, এলএনজির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

আজ জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস। ৯ আগস্ট ১৯৭৫, এই দিনে ব্রিটিশ কোম্পানির কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে পাঁচটি বড় গ্যাসক্ষেত্র কিনে নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখনও গ্যাসের চাহিদা পূরণ করে চলছে সেগুলোই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটতে পারেনি বাংলাদেশ।

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাত্র পাঁচ দিন পূর্বে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু। ব্রিটিশ কোম্পানি শেল অয়েলের কাছ থেকে তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈলাসটিলা– পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কিনে নেন তিনি। প্রায় পঞ্চাশ বছর পর এখনও চাহিদার বড় অংশ পূরণ করে চলেছে বঙ্গবন্ধুর কেনা গ্যাসক্ষেত্রগুলো।

এখন দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় সাড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। উৎপাদনে থাকা ২৯টি ক্ষেত্র পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩শ মিলিয়ন। বাকিটা আমদানি করা এলএনজি, যা কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। মোট গ্যাসের সিংহভাগই যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে।

জ্বালানি স্বনির্ভরতা প্রসঙ্গে ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর দর্শন থেকে আমরা ধীরে ধীরে পিছিয়েছি। এখন আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে যে, অধিকাংশ জ্বালানি আমরা আমদানি করছি। এটা নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার কোনো উদ্যোগ বা কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। বরং দেখতে পাচ্ছি, এলএনজির ওপর আমরা ক্রমাগত নির্ভরশীল হচ্ছি।

অনেকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি দেশের একমাত্র তেল পরিশোধনাগার, ইষ্টার্ণ রিফাইনারীর দ্বিতীয় ইউনিট। দেশে তেলের মজুদ মাত্র দেড় মাস। আর বড়পুকুরিয়া থেকে কয়লা তুললেও আবিষ্কৃত আরো চারটি খনির ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় সরকার।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নিজেদের সম্পদ থাকা অবস্থায় যদি আমরা ইউটিলাইজ না করি, তাহলে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার কথা বলে লাভ নেই। আমার কাছে মনে হয়, এগুলোকে একটা সময়ে সারফেস করা উচিত।

সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির দশ বছর পরও অগ্রগতি নেই সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের। স্থলভাগে সম্পদের খোঁজেও আন্তরিকতা নিয়ে আছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপক আকারে সাগরে অনুসন্ধান শুরু করা প্রয়োজন। জ্বালানি স্বনির্ভরতা অর্জন করতে না পারলে উন্নয়নের সব পরিকল্পনাই ভেস্তে যেতে পারে বলে আশংকা তাদের।