অবৈধ জবরদখল; ময়লা-আবর্জনায় ভরা খালটি এখন মশা উৎপাদনের কারখানা

অবৈধ জবরদখল; ময়লা-আবর্জনায় ভরা খালটি এখন  মশা উৎপাদনের কারখানা

আব্দুল আউয়াল, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : অবৈধ জবরদখল, অপব্যবহার এবং কঠিন ও তরল বর্জ্য নিক্ষেপে সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে খাল ভরাট হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। খালে  নোংরা আবর্জনা ফেলার কারণে  হচ্ছে পরিবেশ দূষণ ও জলাবদ্ধতা। শীত কালে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ময়লা একস্থান থেকে অন্য স্থানে না সরে যাওয়ায় পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। তেমনি বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বরিশালের বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর সাথে ৫নংসলিয়া  বাকপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মহিষাপোতা গ্রামের  প্রয়াত অধ্যক্ষ শামসুদ্দিন প্রফেসরের বাড়ি হয়ে  বানারীপাড়া পৌরসভা ১ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন সরদারের বাড়ি থেকে প্রমথ হালদার সিধুর বাড়ির পাশে সংযোগ হয়ে সন্ধ্যা নদীর সাথে মিলিত হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার খালের বর্তমান অবস্থা যেন অবৈধ দখল ও ময়লা আবর্জনার ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যাচ্ছে সন্ধ্যা নদীর শাখা থেকে বহু খাল প্রভাবশালীর দখলে এবং বানারীপাড়া পৌরসভার অনেক খাল ভরাট করে বহুতল নির্মাণ ভবনও দেখা যাচ্ছে। মহিষাপোতা থেকে সন্ধ্যা নদীর তিন কিলোমিটার প্রায় খালটি নাম নিশানা মাত্র আছে খালের পারে অধিকাংশ প্রভাবশালীরা দখলে নিয়েছে। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে খালের দু পাশেই অনেক বসতবাড়ি রয়েছে। ময়লা আবর্জনা বজ্র ফেলার কারণে এই খালটি ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। এমনকি বাথরুমের পাইপ সরাসরি খালে  সংযোগ দেওয়া হয়েছে। একসময় এইখানে ছোট বড় আকারের ডিঙ্গি নৌকা যাতায়াতের একমাত্র পথ ছিল। এখানকার বসবাসকারী বহু পরিবার  সংবাদকর্মীর কাছে অভিযোগ করেছেন।

মহিষাপোতা খালের পাশেই বসবাসকারী মুদি ব্যবসায়ী মোঃ সোহেল মৃধা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। শীত মৌসুমে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। খালের পাশে বসবাসকারী মিলন মাষ্টার বলেন খালে আর্বজনা ফেলায় পরিবেশ দূষণ হচ্ছে।বাতাসে বাজে দূর্ঘন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। মাহাবুব মাষ্টার বলেন আর্বজনা ফেলার কারণে মশা মাছি ,রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। সকলেরই একই বক্তব্য এর একটা প্রতিকার চাই আমরা।এ ব্যাপারে ৩ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আবু তুর্কি টুলু বলেন এই খালটি  বানারীপাড়া পৌরসভা হয়ে আমার ইউনিয়নে সরাসরি সংযোগ। কিছু অশাধু পরিবার জোর করে দখল করে রেখেছে। ইতিমধ্যে আমি এই খাল খনন করার জন্য উপর মহলে জানিয়েছি।যাতে করে সরকারি কিছু টিআর কাবিখার দ্বারা খাল খননের কাজ করতে পারি ।

১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাহিদ হোসেন সরদার বলেন বানারীপাড়া পৌরসভার অনেক খাল দখল হওয়ার কারণে সমস্ত পৌরসভায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমি চাই অচিরে এই খাল গুলি দখলমুক্ত হোক। আমার ওয়ার্ডে যারা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তাদেরকে আমি এক বিন্দু ছাড় দেবো না। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট  রাজনীতিবিদদের কাছে আমার অনুরোধ অচিরেই এই খাল গুলো দখলমুক্ত করে একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করেন।

সাবেক চেয়ারম্যান শরিফ উদ্দিন আহমেদ কিসলু বলেন আমি ক্ষমতা থাকাকালীন সবসময় চেয়েছি অবৈধভাবে যারা খাল দখল করে রেখেছে তা উদ্ধার করার জন্য।কিন্তু কিছু প্রভাবশালীর কারণে আমি ব্যর্থ হই তাছাড়া মহিষাপোতার  এই খালটি আমি পি আই ও  অফিস থেকে লোকজন এনে কয়েকবার মাপ ও সীমানা রক্ষার কাজ নিজ অর্থে করেছি আমি চাই অচিরেই এই নোংরা পরিবেশ থেকে জনগণ রক্ষা পাক।

এই খাল সম্পর্কে ৫নং সলিয়া বাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সিদ্দিকুর রহমান মাস্টার বলেন  এই খালটি বানারীপাড়া পৌরসভা ও আমার ইউনিয়নে কতটুকু আছে তা একটি মাপ দিয়ে সীমানার মধ্যে এনে দখলমুক্ত করার চেষ্টা করব।

এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ গোলাম ফারুক বলেন, আমি প্রতিটি আইন শৃঙ্খলা মিটিং এ সব সময়ই বলে থাকি অবৈধভাবে যারা খাল দখল করে রেখেছে তা একটি তালিকা তৈরি করে উদ্ধার করার জন্য। এছাড়াও অতি দ্রুত যারা খাল দখল করে রেখেছে তা উদ্ধারের জন্য আইনের মাধ্যমে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।