অবশেষে নিভল সীতাকুণ্ডে তুলার গোডাউনের আগুন
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তুলার গোডাউনে লাগা আগুন ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী ও বিজিবির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় ২১ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (১২ মার্চ) সকাল সোয়া ৯টার দিকে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সকাল সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আর আগুন নেই। তবে কিছু জায়গা থেকে ধোঁয়া উঠছে।
এর আগে শনিবার (১১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর পাশে এসএল গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়ায় নেওয়া একটি তুলার গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ অগ্নি-দুর্ঘটনায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসন জানায়, সপ্তাহ খানেক ধরে এসএল গ্রুপের গোডাউনটিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের স্ফুলিঙ্গ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। গোডাউনে প্রায় ২ হাজার ৭০০ টন তুলা মজুত ছিল। এগুলো দাহ্য হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলমকে। এছাড়া সদস্য করা হয়েছে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ডিআইজি, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমইএ) প্রতিনিধিকে।
সম্প্রতি সীতাকুণ্ডে কয়েকটি বড় অগ্নি-দুর্ঘটনা ঘটে। গত শনিবার (৪ মার্চ) সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেড নামে কারখানায় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এ পর্যন্ত সাতজন নিহত এবং ৩৩ জন আহত হন।
এছাড়া, গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর টানা ৮৬ ঘণ্টা আগুন জ্বলতে থাকে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই দুর্ঘটনায় আশপাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও শ্রমিকসহ ৫১ জন নিহত হন। এছাড়া আহত হন প্রায় দুই শতাধিক। পাশাপাশি ১৫৬টি আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।