নলছিটিতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব ক্ষতির মুখে আমন ধান,বোরো বীজতলা ও শীতকালীন সবজি

নলছিটিতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাব   ক্ষতির মুখে আমন ধান,বোরো বীজতলা ও শীতকালীন সবজি

নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধিঃ 

ঝালকাঠির নলছিটিতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কয়েক শত হেক্টর আমন ধান ও বোরো ধানের বীজতলা। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন সাক ও সবজির। এখানে পানিতে তলিয়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি। আকাল বৃষ্টির ফলে আগাম বোরো বীজতলা ভেসে গেছে। নষ্ট হয়েছে বীজ। ধানের চারা করার জন্য বীজ ধান প্রস্তুত থাকলেও, পানি ও বৃষ্টির কারণে বীজতলায় বুনতে না পারায় ঘরে বসে নষ্ট হচ্ছে কৃষকদের বীজ।

টানা দুই দিনের অব্যাহত ভারি বর্ষণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি থামলেও ফসলি জমিতে পানি আটকে রয়েছে।এতে আমন ধান ও বোরো ধানের চারা উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন চাষিরা। 

নলছিটি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে বিগত বছরগুলোর তুলনায় আরো অধিক জমিতে বোরো রোপণ করবেন কৃষকরা। নভেম্বরের শুরু থেকে এ উপজেলায় বোরো মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে এক ফসলি বোরো আবাদী চাষীরা রোপণের জন্য চারা তৈরির জন্য ধান বীজ বোনা শুরু করেছেন।

সরজমিন খবর নিয়ে জানা গেছে, নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল,কুলকাঠি, সুবিদপুর,মগর ও ভৈরবপাশা ইউনিয়নের কৃষকরা ইতোমধ্যে বিপুল পরিমান জমিতে ধানের বীজ ফেলেছেন। জমিতে ফেলা ধানবীজ বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাচ্ছে। ধানবীজ ফেলার জন্য প্রস্তুত করা জমির ওপর ১-২ ফুট পর্যন্ত পানি রয়েছে। বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে গেলে এ এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করছেন কৃষকরা।

মোল্লারহাট ইউনিয়নের কামদেবপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমার তিন একর জমির আমন ধান বাতাসের পরে গেছে। ধানের উপর পানি থৈই থৈই করছে।দু'এক দিনের মধ্যে পানি নামলে সব ধান নষ্ট হয়ে যাবে।

কুশঙ্গল ইউনিয়নের ডহরা গ্রামের কৃষক আউয়াল, ছোবাহান,আঃ ছালাম ও বেলাল হাওলাদার বলেন, ৫ শত ৮০ টাকা কেজি দরে ১০ কেজির বস্তায় বীজ ধান কিনে জমিতে বুনেছিলাম। কিছু জমির বীজ ধান চারা করার জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি। যে জমিতে বীজ বুনবো সেখানে এখন প্রায় ২ ফুট পানি। শনি ও রোববার এরমধ্যে পানি না কমলে, আমাদের কয়েক হাজার টাকার ধান ফেলে দেওয়া লাগবে।

নাচনমহল , রানাপাশা ইউনিয়নের কৃষকরা জানিয়েছেন, ঝড়ে তাদের রবি শস্য খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমন ধানের খেতে খেসারি ডাল,লাউ,সিম গাছ তলিয়ে গেছে।বন্যায় মাছের ঘেরের পেঁপে,কলা গাছ ও ভেঙে পড়েছে।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ ইলিয়াস  বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বোরো ধানের বীজতলা, আমন ধান ও সাক সবজি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো সময় রয়েছে, কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে সহযোগিতা দেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে উপজেলা কৃষি বিভাগকে দিতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষতিপুষে উঠতে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।